জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজর নামাজের পর থেকে নিয়ে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত সময়কে আইয়ামে তাশরিক বা তাশরিকের দিন বলে। এ দিনগুলোতে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বিশেষ তাকবীর পাঠ করতে হয়। এই তাকবীরকে বলা হয় তাকবীরে তাশরীক। তাকবীর একবার বলা ওয়াজিব। আর তাশরীক শব্দের অর্থ হলো- সূর্যের আলোতে রেখে গোশত শুকানো। আরবগণ তাদের কুরবানীর গোশত ঈদের তিনদিন পর পর্যন্ত রোদে দিয়ে শুকাতো, এজন্য এ দিনগুলো আইয়ামে তাশরীক বলা হয়। তাকবীরে তাশরীক হলো- 'আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ'- বাক্য বলা। এ দিনগুলিও শ্রেষ্ঠ ও ফযীলতপূর্ণ দিনসমূহের অন্যতম; যে মহান আল্লাহ পাক তাঁর যিকর করতে আদেশ করেছেন।
[সূরা বাক্বারাহ - ২০৩]
এ দিনসমূহ যেমনি ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আযকারের দিন তেমনি আনন্দ করার দিন। যেমন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আইয়ামুত-তাশরীক হল খাওয়া-দাওয়া ও আল্লাহর যিকিরের দিন। এ দিনগুলোতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দেয়া নেয়ামত এর মাধ্যমে তার শুকরিয়া ও জিকির আদায় করা। জিকির আদায়ের কয়েকটি পদ্ধতি হাদিসে এসেছে
এ গুলো ছাড়াও যে কোনো সময় ও যে কোনো অবস্থায় আল্লাহর জিকির করা।
[মুসলিম ১১৪১]
প্রতি ফরয নামাযের পর তাকবীর পাঠ। যা তাশরীকের শেষ দিনের আসর পর্যন্ত পড়তে হয়। অবশ্য অনেক উলামাগণ মনে করেন যে, তাকবীর কেবল নামাযের পরেই সুনির্দিষ্ট নয়। বরং এই দিনগুলিতে যে কোন সময় সর্বদা পড়াই উত্তম।
অভিমতটি অবশ্যই যুক্তিযুক্ত। যেহেতু আল্লাহ তাআলা এই দিনগুলিকে যিকর দ্বারা বিশিষ্ট করেছেন। কিন্তু তাতে কোন নির্ধারিত সময় নির্দিষ্ট করেন নি। তিনি বলেন, এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনগুলিতে আল্লাহর যিকর কর।
[সূরা বাক্বারাহ - ২০৩]
আর এই আদেশ হাজী-অহাজী সকলের জন্য সাধারণ। তদনুরূপ রসূল (সা.) ও বলেন, ‘‘এই দিনগুলি আল্লাহর যিকর করার দিন।’’ অতএব এই নির্দেশ পালন স্পষ্টভাবে তখনই সম্ভব হয় যখন তকবীরাদি সর্বাবস্থায় (যে অবস্থায় আল্লাহর যিকর করা চলে) পাঠ করা হয়। যেমন, নামাযের পরে, মসজিদে, বাড়িতে, পথে, মাঠে ইত্যাদিতে।
[নাইলুল আওতার - ৩/৩৫৮]
যেহেতু দিনগুলি অধিক রূপে খাওয়া ও পান করার দিন, যাতে পূর্বে আল্লাহর নাম ও পরে তার প্রশংসা করায় যিকর হয়।